বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি সফট স্কিলে দক্ষতা বাড়াতে হবে : উপাচার্য

খুবিতে নবীন শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ওরিয়েন্টেশনের তৃতীয় দিন অতিবাহিত

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ‘উইক অব ওয়েলকাম’ শীর্ষক ৫ দিনব্যাপী একাডেমিক ওরিয়েন্টেশনের তৃতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল ৯.৩০ মিনিটে ওরিয়েন্টেশনের তৃতীয় দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) আয়োজিত এ ওরিয়েন্টেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্রিয়া হচ্ছে বিশ্বমানের নাগরিক তৈরি করার প্রক্রিয়া। এখান থেকে উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি সফট স্কিলে দক্ষতা বাড়াতে হবে। কারণ, শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও যোগ্যতা না থাকলে শুধুমাত্র একাডেমিক ডিগ্রি দিয়ে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা কঠিন।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশের সাথে সাথে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের মুখোমুখি হয় শিক্ষার্থীরা। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে সহপাঠীদের সাথে পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। টিমওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে। নিজেকে অপরের সহযোগিতায় যোগ্য ও দক্ষ করে তুলতে হবে। নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বদানের সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। জীবনে চলার পথে অনেক সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ আসবে, সেগুলো মোকাবেলা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
এর আগে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথা অনুসারে নবাগত শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। উক্ত শপথবাক্যে সন্ত্রাস, ছাত্ররাজনীতি, র‌্যাগিং ও মাদককে না বলার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশিদ খান। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পদ্ধতি ও শিক্ষার মান অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে আলাদা। এখানে একই একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। শিক্ষার সার্বিক পরিবেশও অত্যন্ত চমৎকার। দেশ--বিদেশে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম সর্বজন বিদিত। তিনি আরও বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নকালে তোমরা যে সময়টা পাচ্ছো, এই সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে। নিজেকে বিশ্বমানের হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। একজন ভালো মানুষ হতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী, সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আবুসাঈদ খান, আইন স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত)  প্রফেসর ড. মো. নাসিফ আহসান এবং চারুকলা স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শেখ সিরাজুল হাকিম। আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. সালাউদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপ-রেজিস্ট্রার মোঃ নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনসমূহের প্রধানবৃন্দ এবং নবাগত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ওরিয়েন্টেশনের দ্বিতীয় পর্বে উপাচার্য রিসোর্স পারসন হিসেবে ‘কপিং এন্ড থ্রাইভিং ইন হায়ার এডুকেশন এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক একটি টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপন করেন। এতে তিনি ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং দ্য ইউনিভার্সিটি এনভায়রনমেন্ট’, ‘কমিটমেন্ট’, ‘পারসোনাল এন্ড একাডেমিক গোলস’, ‘বিল্ডিং সোশ্যাল কানেকশন’, ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ এবং ‘ফিন্যান্সিয়াল সাপোর্টস’ বিষয়ে আলোকপাত করেন।
এ ছাড়াও আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. শামীম আহসান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. সফিকুল ইসলাম রিসোর্স পারসন হিসেবে টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে নবাগত শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন মুদ্রিত সমন্বিত প্রসপেক্টাস বিতরণ করা হয়। কর্মশালার তৃতীয় দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, ডিভেলপমেন্ট স্টাডিজ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, ভাস্কর্য এবং আইন ডিসিপ্লিনের নবাগত শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।