শুদ্ধাচার বাস্তবায়নে প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি : উপ-উপাচার্য

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় শুদ্ধাচার কর্মপরিকল্পনা ২০২৩-২০২৪ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে শুদ্ধাচার সংক্রান্ত ও বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ২০২৩-২৪ বাস্তবায়ন শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ আজ ৩১ মার্চ (রবিবার) অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯.১৫ মিনিটে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন উপ-উপাচার্য (উপাচার্য, চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা।
তিনি বলেন, নিজের আচরণে এবং কর্মক্ষেত্রে শুদ্ধতাই প্রকাশ করে শুদ্ধাচার। এটি বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য দাপ্তরিক কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ, শুদ্ধাচার শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে না। এটি নির্ভর করে পুরো ব্যবস্থার ওপর। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল দেশকে দুর্নীতি ও শোষণমুক্ত করে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলা। তাঁর আদর্শ ও নৈতিকতা মেনে এ দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আর এই সোনার বাংলা গড়তে প্রয়োজন সোনার মানুষের। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সেই সোনার মানুষ তৈরির কাজ যথাযথভাবে করছে বলে তিনি মনে করেন।
উপ-উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিএ মূল্যায়নে এ বছর আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি পেয়েছে। এসব কিছু সম্ভব হয়েছে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মেধা ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে। যার কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ এবং ইউজিসিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বদলে যাওয়াকে উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিতে নিজের কাজ যথাযথভাবে সম্পাদন করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যখন সৃষ্টি হয়, তখন তার একটি লক্ষ্য ছিল। এই লক্ষ্যের মধ্যেই প্রথম শুদ্ধাচার শব্দটি যুক্ত ছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চিন্তা-ভাবনায় ছিল- ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠন। জাতির পিতার সেই দর্শন বা চিন্তা আমাদের মননে আজ অনুপস্থিত। তিনি আরও বলেন, শুদ্ধাচারের মাধ্যমে সমাজে নতুন মূল্যবোধের সৃষ্টি করতে হবে। এর জন্য নৈতিকতা দরকার। আর নৈতিকতা অর্জনে প্রয়োজন দেশপ্রেম। এই দেশপ্রেম সৃষ্টি হয় শুদ্ধাচারের মাধ্যমে। এজন্য আমাদের পরিবার থেকেই শুদ্ধাচার চর্চা করা প্রয়োজন।
সভাপতিত্ব করেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিএ টিম লিডার প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সেকশন অফিসার মমতাজ খন্দকার লাবনী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর টেকনিক্যাল সেশনে রিসোর্স পারসন হিসেবে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল এবং বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সম্পর্কিত ধারণা ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. শাহনেওয়াজ নাজিমুদ্দিন আহমেদ, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. ইয়ামিন কবীর, এপিএ’র ফোকাল পয়েন্ট উপ-রেজিস্ট্রার এস এম আবু নাসের ফারুক এবং আঞ্চলিক লোক প্রশাসন কেন্দ্র, খুলনার সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ও সরকারের সিনিয়র সহকারী সচিব তাছলিমা আক্তার। এ প্রশিক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের ১০০ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে বিকেলে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী।