খুবিতে বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপিত
শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে : উপাচার্য
আজ ১৭ মার্চ (রবিবার) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপিত হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে বেলা ১১টায় চারুকলা স্কুলের আঙিনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছোটবেলা থেকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করতেন। শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় সহপাঠীদের অধিকার আদায়ে তিনি কাজ করেছেন। আজকের এই শিশুদের মধ্যে সেই ছোট বঙ্গবন্ধু ‘খোকা’র মানসিকতা তৈরি করতে হবে। শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সময়ের সাথে সাথে তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও বিশালতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি সবসময় বাঙালির কথা চিন্তা করেছেন এবং বাঙালির প্রতিটি মানুষকে অন্তরে ধারণ করেছেন। মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশের মানুষ তার অধিকার আদায় করতে পারছে। দেশে অতীতের তুলনায় স্বাক্ষরতার হারও বেড়েছে। যেখানে পাকিস্তানে স্বাক্ষরতার হার ৫৮ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশে স্বাক্ষরতার হার এখন ৭৫ শতাংশ। এটাই শুধু নয়, আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে।
উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু একজন সৎ মানুষ ছিলেন। আমরা যদি প্রত্যেকে সৎভাবে চলি এবং নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করি তাহলে ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন ও ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ তথা ‘সোনার বাংলা’ অচিরেই প্রতিষ্ঠিত হবে।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। সভাপতিত্ব করেন চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. নিহার রঞ্জন সিংহ। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. তুহিন রায়।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রকিবুল হাসান সিদ্দিকী, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের সভাপতি দীপক চন্দ্র মন্ডল এবং প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী তানহা বিশ্বাস। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী জারিন রেশনী প্রভা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধানসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য শিশু চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
এর আগে সকাল ৯টায় শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের সামনে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে শুরু করে হাদী চত্বর ঘুরে কালজয়ী মুজিব প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, বিভাগীয় প্রধান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্টবৃন্দ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ অংশ নেন।
এরপর বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ‘কালজয়ী মুজিব’ বেদীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপাচার্য প্রথম শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) উপস্থিত ছিলেন। পরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, বিভিন্ন ডিসিপ্লিন, আবাসিক হলসমূহ, শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। পরে সকাল ১০টায় চারুকলা স্কুলের আঙিনায় শিশু-কিশোরদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়।
এছাড়া বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও প্রশাসন ভবন সংলগ্ন মসজিদে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেট, মেইনগেট থেকে হাদী চত্বর পর্যন্ত রাস্তা, প্রশাসনিক ভবন, ক্যাফেটেরিয়া, হলসমূহ এবং উপাচার্যের বাসভবন আলোকসজ্জা করা হয়।