প্রধানমন্ত্রীর সততা ও দূরদর্শিতায় বাংলাদেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রার পথে পরিচালিত হচ্ছে : উপাচার্য
বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ
২৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
৭৭তম জন্মদিন উদযাপিত হয়। এ উপলক্ষ্যে সকাল ১১.৩০ মিনিটে খুলনা
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের উপাচার্যের সভাকক্ষে এক আলোচনা
সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর
ড. মাহমুদ হোসেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
যে স্বপ্ন নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, দেশ-বিদেশের কতিপয় ষড়যন্ত্রকারীদের
বিশ্বাসঘাতকতায় সে স্বপ্ন নস্যাৎ হয়ে যায়। সপরিবারে প্রাণ হারান জাতির
শ্রেষ্ঠ সন্তান। বিদেশে থাকায় পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের সেই নারকীয় হত্যাকাণ্ড
থেকে বেঁচে যান আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর ছোট বোন
শেখ রেহানা। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের তেমন
কোনো শক্তিশালী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ছিলো না। বিদেশে থাকাকালীন বঙ্গবন্ধুকন্যা
শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত করা হয়। দেশের
স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষ তাদের আশা ফিরে পায়। তিনি দেশে ফিরে আসার পর তাঁকে
বারবার হত্যার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগ ও
আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি আজও বেঁচে আছেন।
উপাচার্য বলেন, আজকের এই
বাংলাদেশ অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ আজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। তিনি দেশ ও জাতির মাঝে
আশার আলো জ্বেলেছেন। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে অনেক সূচকে আজ বাংলাদেশ
এগিয়ে। প্রধানমন্ত্রীর এই উন্নয়নের ধারায় তিনি এ পর্যন্ত ৩৭টি আন্তর্জাতিক
পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ আজ
দৃশ্যমান। তিনি বলেন, গত তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে নারীদের ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষার উন্নয়নে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী শিক্ষার্থীদের
সংখ্যাও বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ
অবাস্তব নয়। হয়ত তার আগেই দেশ সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে বলে তিনি
আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপাচার্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও এই সরকারের
বিরুদ্ধে আজ দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর
স্বপ্ন পূরণে তাঁর পাশে দাঁড়ানো। স্বপ্ন একটাই দেশের উন্নয়ন। তিনি যেভাবে
বাঙালি ও বাংলাদেশকে ভালোবাসেন, এমন উদাহরণ আমরা আর কারো মধ্যেই দেখতে পাই
না। তাঁর সততা, দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতায় বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের অগ্রযাত্রার
পথে পরিচালিত হচ্ছে। তাই আমাদের উচিত সকল বিভক্তি ভুলে দেশের এই অগ্রযাত্রা
ধরে রাখতে আবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আনা। এজন্য
আমাদের সকলের কাজ করা প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে- দল ক্ষতিগ্রস্ত হলে, দেশও
ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সবশেষে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য,
দীর্ঘায়ু ও সফলতা কামনা করেন।
আলোচনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহজ, সরল ও সাধারণ মানুষ। তাঁর মধ্যে কোনো
আনুষ্ঠানিকতা নেই। তাঁর মাঝে আমি মা ও বোনের ছায়া দেখতে পাই। দেশের মানুষ
জাতির জনকের প্রতি যেমন আস্থা রেখেছিলেন, তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার
উপরও আস্থা রেখেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার অস্তিত্ব দিয়ে
এগিয়ে চলেছে। এ দেশের জন্য তাঁর কোনো বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন,
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করেন না, তা তিনি
নিউইয়র্কে বসেই বলেছেন। এটাই শেখ হাসিনার দৃঢ়তা।
রেজিস্ট্রার
(ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুসের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য
রাখেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. লস্কর এরশাদ আলী, আইন
ডিসিপ্লিন প্রধান তালুকদার রাসেল মাহমুদ, সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক
মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান সিদ্দিকী, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক
উপ-রেজিস্ট্রার দীপক চন্দ্র মন্ডল, কর্মচারীদের পক্ষে পার্সোনাল
অ্যাসিস্ট্যান্ট মো. জয়নাল ফরাজী।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার
সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. অনুপম কুমার
বৈরাগী, অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক শেখ মুজিবুর রহমান, উপাচার্যের সচিব
সঞ্জয় সাহাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত
ছিলেন।
এর আগে সকাল ১১টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন সংলগ্ন
জামে মসজিদের সম্মুখে দেশীয় শিমুল গাছের চারা রোপণের মধ্য দিয়ে বৃক্ষরোপণ
কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। পরে বাদ জুম্মা
প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয়
জামে মসজিদে দোয়া এবং মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।